Click here to view আমাদের কথা in pdf format.
আমাদের কথা
প্রত্যন্ত গ্রামের প্রথম অনার্স গ্রাজুয়েট মানুষটা পেয়েছিল সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে অশেষ সহযোগিতা। স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করে সেই মানুষটি চেষ্টা করেছিল সমাজের প্রতি তাঁর দায়িত্ব পালন করতে এবং সাধ্যমত সাহায্য ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে। সেই প্রয়াস শুরু হল ২০১১ সালের শরৎকালে। সূচনা হল ‘আলো’র পথ চলা। সঙ্গে ছিল বেশ কিছু সমমনস্ক সহপাঠী, বন্ধু, শুভানুধ্যায়ী ও ঈশ্বরসম মানুষদের অকৃত্রিম স্নেহ, ভালোবাসা ও এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। স্বামীজীর ‘ব্রহ্মতেজ’ ও ‘ক্ষাত্রবীর্যে’র আহ্বান তো ছিলই, তার সঙ্গে মিশে গিয়েছিল নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন আবাসিক মহাবিদ্যালয়ের তৎকালীন অধ্যক্ষ পরমপূজ্যপাদ স্বামী সুপর্ণানন্দজী মহারাজ তথা সর্বজনপ্রিয় ‘সত্য মহারাজে’র অকৃত্রিম স্নেহ ও ভালোবাসা। সেই প্রয়াসে সঞ্জিবনী শক্তি প্রদান করেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান সহ-উপাচার্য মাননীয় শ্রী প্রদীপ কুমার ঘোষ ও নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন আবাসিক মহাবিদ্যালয়ের অধ্যাপক শ্রী অচিন্ত্যম চ্যাটার্জী মহাশয়দ্বয়। এছাড়াও অসংখ্য জ্ঞানী ও বিদ্বান মানুষদের সহচর্যে দীপ্ত হয়েছে আলো, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন আইএসআই কলকাতার প্রাক্তন অধিকর্তা পদ্মশ্রী বিমল রায়, বিড়লা তারামণ্ডলের অধিকর্তা ও বিশিষ্ট মহাকাশ বিজ্ঞানী দেবীপ্রসাদ দুয়ারী, রাজ্যের প্রাক্তন মূখ্যসচিব শ্রী অশোক মোহন চক্রবর্তী, নাসার বিজ্ঞানী ও চিত্র পরিচালক বেদব্রত পাইন, চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ, অভিনেতা মনোজ মিত্র, চিন্ময় রায়, পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়সহ একাধিক অকৃত্রিম হৃদয়।
সেই ভালোবাসা ও উৎসাহকে আশ্রয় করেই সাত বছর অতিক্রম করে আজ আলো ‘৮’-টে। এই ৮-বছরে আলো খুঁজে পেয়েছে পুরুলিয়ার টুম্পা বাউড়ি, টুম্পা মাহাতো, বাঁকুড়ার সেখ করিমুল্লাহ, মিতা ধবল, বীরভূমের মধুশ্রী রুজ, উত্তর চব্বিশ পরগণার সামিম গোলদার, নদীয়ার নৌরিন খাতুন, বিবেক মন্ডল, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার সাগরের রবিশঙ্কর পাল, সুন্দরবনের বৃন্দাবন মাইতি, হাওড়ায় শ্যামপুরের দিপ্তী বর্মন, অপরাজিতা মান্না, সুস্মিতা দুয়ারী, পশ্চিম মেদিনীপুরের সুষমা কেরাই, শঙ্কর সামন্ত, পূর্ব মেদিনীপুরের সৌরিমা মাইতি, হুগলীর সোমা মালিক, মুর্শিদাবাদের সুফল মন্ডলদের। যাদের সামান্য অর্থের অভাবে মাধ্যমিকের পরেই পড়াশোনার দরজা প্রায় বন্ধ হতে শুরু করেছিল। সিলেকশান বোর্ডে বসে তাদের চোখের জলে আলো’র সদস্যরা বুঝেছিল, পড়াশোনার প্রতি তাদের অসীমা ক্ষুধা, আগ্রহ ও আকুতি। আলোর সদস্যরা বুঝেছিলেন, প্রকৃত মেধাবী হওয়া সত্বেও সামান্য অর্থের অভাবে সেই মেধার বিকাশ ও অন্বেষণ অসম্ভব হয়ে পড়ছে। সেই চেতনা থেকেই আলো তাঁদের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিয়ে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ১০৩জন প্রথম জেনারেশান শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাদের শিক্ষা ও সার্বিক বিকাশের লক্ষ্যে আলো গত সাত বছরে দশ লক্ষাধিক টাকা বৃত্তি হিসেবে প্রদান করতে সক্ষম হয়েছে। বলাবাহুল্য এই ১০৩ জনের মধ্যে বেশিরভাগ ছাত্রী। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পরে যাঁদের বাবা মায়েরা অসীম আশির্বাদের সঙ্গে অনর্গল ভাবে বলে গেছেন, ‘আপনারা না থাকলে এতদিনে আমার মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিতাম। আপনাদের জন্য আজ সে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখছে’। তাদের দেখা স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্যই তো আলো সারাবছর ধরে পড়াশোনার সম্পূর্ণ তদারকির দায়িত্ব পালন করে আসছে। বন্ধু, বলতে গর্ব হয় গত সাত বছরে আলো’র সদস্যরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কখনও মাঠে, কখনও লবিতে, কখনও ইউনিয়ন রুমে বসে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা ছাত্রছাত্রীদের বিরক্তিহীন ভাবে যাবতীয় সমস্যার সমাধানে যথাসম্ভব সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে চলেছে। আপনিও আলোর দিকে হাত প্রসারিত করে তাদের পড়াশোনার সংক্রান্ত মূল্যবান উপদেশ ও অর্থ সাহায্য করতে পারেন। বন্ধু, সারা জীবন তো নিজের জন্য ভাবলেন, আগামীতেও তাই হবে। তবে কিছুটা ব্যতিক্রমী ভাবে যদি জীবনকে দেখতে চান তাহলে আলো’কে চলতে পারেন।
বন্ধু, আমাদের আশা ও আকাঙ্খা খুব বেশী নয়। দৈনিক ১০ টাকা (আজকের দিনে তা এমন কিছুই না, একটা সিগারেট দামও তার থেকে বেশী) করে যদি আপনি আলো’র জন্য রাখেন, তাহলে মাসে ৩০০ টাকা হয়, আর বছরে হয় ৩৬০০ টাকা। আপনার মত দুইজন সাধরণ মানুষ এগিয়ে এলে আলো পৌছে যাবে প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষ্ণা, সাগর, পারভেজ টোটনদের কাছে। তাদের মধ্যে উচ্চশিক্ষার স্বপ্নের বাস্তবায়ন ও প্রকৃত মানুষ হওয়ার মশাল তুলে দিতে। তাই আপনার মত সহৃদয় করুণাসিন্ধুর প্রতি আকুতি এগিয়ে আসুন, কিছুটা সময় অন্তত অন্যকে নিয়ে বাঁচুন।
সত্যি বলতে পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতে বৃত্তি প্রদানকারী অজস্র সংস্থা রয়েছে। বন্ধু, বলতে পারেন তাদের মধ্যে ঠিক কতগুলো সংস্থা বৃত্তিগ্রহণকারীর সঙ্গে তার অভিভাবকের যাতায়াতের পৃথক খরচ বহন করে? বলতে পারেন ঠিক কতগুলো সংস্থা নিজেদের একটা অফিস পর্যন্ত না করে মাঠেঘাটে বসে অবিরাম কাজ করে চলেছে? বলতে পারেন ছাত্রছাত্রীদের ভাই ও বোন বলে তাদের সর্বপ্রকার দুঃখের সাথী হয়েছে? গর্ব করে বলি বন্ধু, ‘আলো’ তা করে এবং করে চলেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে ! বৃত্তি, শিক্ষার তদারকির সঙ্গে সঙ্গে পরিবার ও তার চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়ে আলোর সদস্যরা ঝাঁপিয়ে যান পরম আন্তরিকতায়।
এই আন্তরিকতাকে আশ্রয় করেই আবার আলো এগিয়ে চলেছে, আর খুঁজছে আপনার মত সহৃদয় মানুষদের। যাঁদের অকৃপণ সহযোগিতা ও সাহায্যে আলো হতে পারে আগামী দিনে শিক্ষা প্রসারের প্রকৃত মশাল। যে কোন ধরনের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসুন। যোগাযোগ করতে পারেন ৯৮৩০৬২৮১৬২, ৯৮৩৬৮৬৭১৬১, ৯০৩৮০৮৬৩৩৮, ৯৮৩২৭০২৫৭৫।
আর্থিক সাহায্য সরাসরি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে পাঠাতে পারেন অথবা ক্যাশ ও আলো’র (AALO) নামে চেক দিতে পারেন। আমাদের ঠিকানা
Aalo Charity Organization
C/o- Tanmoy Sinha, 81 Indra Biswas Road, Kolkata- 700037, West Bengal, India
Account Details:
Bank: United Bank of India
Branch: Jadavpur Vidyapith Branch
Name of the current account holder: AALO
ACCOUNT NUMBER: 1517050000392
IFSC CODE: UTBI0JDVF51
আপনাদের সকলের কাছে অনুরোধ আপনি পড়ুন এবং অপরকে পড়ার সুযোগ করে দিতে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও অন্যান্য সোশ্যাল নেটওয়ার্কে দয়াকরে যতসম্ভব বেশি শেয়ার করুন। আপনার শেয়ারের মাধ্যমে আরও একটি ছাত্রছাত্রী পড়ার সুযোগ লাভ করতে পারে।